ওরাই প্রমাণ করছে তারেক জিয়া একজন কাপুরুষ

MS ISLAM _ BDTutorials2
0


কেউ তারে কয় বীরপুরুষ, কেউবা বলে কাপুরুষ, কেউ বলে নেই হুঁশ, ফকরুল সাহেব বলেন, তারেক রহমান ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়ক। আমি ছোট্ট একটি ছড়ার মাধ্যমে বীর বন্দনা করছিঃ

তারেক জিয়া বীরের বেশে, 
আসবেন নাকি বাংলাদেশে!
ন্যান্সিরা তাই আছে বসে,
বরণ করবেন হেসে হেসে।

কেউবা আবার হেসে কয়,
বীরের বেশে তারেক নয়,
যতই করুক আহাজারি,
তিনি একজন ফেরারি।

হোক না কেহ মহাদোষী,
তবুও সে বাংলাদেশী
জন্ম যদি এই দেশে হয়
ফিরতে কেন লাগে ভয়?

কেউ যদি হয় দেশের দোষী
করবে বিচার দেশবাসী,
দেশে আসতে বাধা কই?
তবে কেন হইচই?

বীর বলি আর চোর বলি,
ফালতু কথা কে কয়?
কাজের মধ্যেই পাওয়া যায়,
আসল বীরের পরিচয়।  

আজকাল অনেকেই খুব ট্যালেন্ট। সবার আইকিউ আজকাল অনেক বেশী। সবাই বোঝে কে বীর আর কে চোর। আমি কাউকে আমি জ্ঞান দিতে আসিনি। তবে আমরা যারা বীরপুরুষ বীরপুরুষ বলে লিল্লাচিল্লি করছি, তারা কি কখনো ভেবে দেখিছি যে, বীরপুরুষরা কি দূরে বসে ঢিল ছুড়ে? আমি তো জানি কাপুরুষরা দূরে বসে ঢিল ছুড়ে, বীরপুরুষরা সম্মুখে যায় লড়ে। আমাদের ভাগ্য ভাল যে,  দেশে একজন বীরপুরুষ পেয়েছিলাম, তিনি এখন লন্ডন থেকে প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছেন। তাঁর এই লড়ে যাওয়াটা আমার কাছে ঈশপের গল্পের মতো মনে হয়েছে, তাই নিন্মে আমি ছোট্ট ০২টি গল্প উল্লেখ করছিঃ

০১/ এক গাধা আর এক মোরগ এক সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খাবারের খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে এক সিংহ সেখানে এসে হাজির। ক্ষুধার্ত সিংহ যেই গাধাটার উপর লাফিয়ে পড়তে গেল, ঠিক তখনই মোরগটা বিকট চিৎকার দিয়ে কোঁকর-কোঁ করে ডেকে উঠল। লোকে বলে, সিংহ মোরগের ডাক একেবারে সহ্য করতে পারে না। হলও তাই, মুহূর্তে মুখ ঘুরিয়ে সিংহটা সেখান থেকে পালিয়ে গেল। তুচ্ছ এক মোরগের ডাকেই সিংহটাকে এমন কেঁপে যেতে দেখে গাধার খুব সাহস এসে গেল। সিংহটাকে আক্রমণ করার জন্য সে ওটার পিছু ধাওয়া করল। বেশীদূর যাওয়ার আগেই অবশ্য সিংহটা ঘুরে দাঁড়িয়ে গাধাটার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে টুকরো টুকরো করে ফেলল।
গল্পের শিক্ষাঃ ফালতু সাহস প্রায়ই বিপদ ডেকে আনে। 

০২/ একদিন দুজন সৈন্য একসাথে বেড়াচ্ছিল। হঠাৎ একটা ডাকাত তাদের উপর চড়াও হল। সৈন্যদের একজন পালিয়ে গেল। অন্যজন তলোয়ার বাগিয়ে জোরদার লড়াই দিল। ডাকাতটা যখন মারা পড়ল, সেই পালিয়ে যাওয়া ভীতু সৈন্যটা তখন ফিরে এল। এসেই সে তার জোব্বাটা ছুড়ে ফেলে দিল। তারপর খাপ থেকে তরোয়াল বার করে লাগিয়ে দিল জোর হাঁক-ডাক, “এখুনি আমি হতচ্ছাড়া ডাকাতের মজা দেখাচ্ছি। এমন শিক্ষা দেব ওদের যে, হাড়ে হাড়ে টের পাবে কার সাথে লাগতে এসেছিল!ডাকাতের সাথে লড়ে-যাওয়া সৈন্যটি এই সব শুনে বলল, “হাঃ, একটু আগে যখন আমি লড়াই করছিলাম, ঠিক সেই সময়টায়, কিছু না হোক এই কথাগুলোই যদি তুমি বলতে! তোমার কথায় বিশ্বাস করে আমি অন্ততঃ আরো একটু মনের জোর নিয়ে লড়ে যেতে পারতাম! তোমার তলোয়ার এখন তুমি বরং খাপেই ভরে রাখো। আর ফালতু কথাগুলোও বন্ধ করো। যারা তোমায় চেনে না, তাদের তুমি এর পরেও যে ঠকিয়ে যাবে সে আমি জানি। কিন্তু, আমি ত দেখেছি কত তাড়াতাড়ি কি দৌড়টাই তুমি লাগিয়েছিলে! তোমার বীরত্বে ভরসা রাখার মত লোক আর যেই হোক, আমি নই আর!
গল্পের শিক্ষাঃ একবার যে কাপুরুষের রূপ বেড়িয়ে পড়েছে, তার বীরত্বের আস্ফালন-এ কেউ আর পাত্তা দেয় না।

রাজনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত দল বিএনপির এখন লম্ফঝম্ফ এবং ফালতু বক্তব্য দেওয়া ছাড়া যেন আর কিছু নেই। যেই লোকটাকে বিএনপির সবাই দেশের কাণ্ডারি বলে মনে করে থাকে। অনেকে মনে করেছিল অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুল শুধরে নেবে, কিন্তু হচ্ছে তাঁর উল্টো।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা যে কুচিন্তায় আচ্ছন্ন তার প্রমাণ ২৫ মার্চ লন্ডনে এক সভায় দেওয়া তার বক্তৃতা থেকেও পরিষ্কার হয়েছে। ওই সভায় তিনি দাবি করেছেন যে, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অস্বীকার করে তারেক রহমান এমন কথাও বলেছেন যে, সাত মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর পাকিস্তানিদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠকের কারণে মুক্তিযুদ্ধ বিলম্বিত হয়েছে। পাকিস্তানিদের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের সমঝোতা-চেষ্টার কারণেই বাংলাদেশের ত্রিশ লাখ নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য পাঠ করে যে কোনো পাঠকই নিশ্চয়ই তার কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। নির্বোধ ছাড়া কারও পক্ষে এ ধরনের অর্বাচীন মন্তব্য করা সম্ভব কি-না সে প্রশ্নও আসে। এমন একজনকেই যখন বিএনপির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারিহিসেবে প্রচার করা হয়, তখন বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না।
তবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা ধরনের গাঁজাখোরি গল্প বিএনপির কোনো কোনো নেতা যে এর আগেও ফাঁদেননি, তা নয়। তারেক রহমান সেই ধারায় নতুন মাত্রা যোগ করলেন মাত্র। জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতিবলার মতো চরম অসত্য বক্তব্য দিয়ে তিনি শুধু ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাননি, সংবিধান লঙ্ঘন করে অমার্জনীয় অপরাধও করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই যে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি সেটা সংবিধানেও লেখা আছে। তাঁর অবদান খাটো করতে গিয়ে পুত্র যে প্রলাপ বকেছেন, বেঁচে থাকলে তা শুনে পিতা নিজেও লজ্জিত হতেন।(তথ্যঃ বিডি নিউজ ২৪)   
যিনি দেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি বলে বিএনপির সবাই মনে করে থাকে, তিনি যদি এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য দেন, তাকে তো কিছু কটু কথা শুনতেই হবে। তাই ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, 
যারা রাজনীতি করবে না বলে মুসলেকা দিয়ে বিদেশে পালায় এবং মীমাংসিত ইতিহাসকে অমীমাংসের দিকে নিয়ে গিয়ে বিবৃত করে তারা কাপুরুষ বলে মন্তব্য করেছেন যোগাযোগ মন্ত্রী ও আলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের।
শুত্রুবার বিকালে শিল্পকলা একাডেমীতে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামগ্রন্থের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েছে, বিচারের ভয়ে দেশে আসে না তাদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।

বিএনপি ইতিহাস বিকৃত করে নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বে উপনীত করছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন প্রতিষ্ঠিত ইন্সুকে বির্তকিত করার জন্য আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করতেও পিছু পা হচ্ছে না। ( তথ্যবাংলা নিউজ ২৪ ডট কম )

আমি যতটুকু বুঝি, দেশের ছেলে দেশে আসবেন, তাকে ভয় দেখিয়েও লাভ নেই বা ভয় পেয়েও কোন লাভ নেই। অন্যায়ের বিচার দেশেই হবে। নেলসন ম্যান্ডেলা তো ২৭ বছর জেল খেটে ক্ষমতায় গিয়েছিলেন। তবে ভয় কিসের? তারেক রহমান সাহেব, আপনি যেমন ফালতু বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং আপনার দলের লোকেরা যেমন, গাঁজাখুরি কথাতো বলছেনই এমনকি চরম অসত্য কথাকেও সমর্থন করে যাচ্ছে।
এতে কি আমরা বলতে পারিনা, ওরাই প্রমাণ করছে তারেক জিয়া একজন কাপুরুষ।

মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
লেখক_ অন্যধারা প্রকাশন




 




Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)