শাপলা চত্বর নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে, কিন্তু এই ভুলের রাজনীতির জন্য বিনপিকে যে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে তা কাটিয়ে উঠতে ওদের কতদিন লাগবে তা আল্লাহই ভাল জানেন।
বিডি নিউজ ২৪ ডট কমে আমানুল্লাহ কবীরের একটি মন্তব্য এরকম “একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত বা কৌশলের জন্য বিএনপি যে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, তাতে কেনো সন্দেহ নেই। ক্ষমতায় থাকাকালেও বিএনপির ভুল সিদ্ধান্তের জন্য এক-এগারোর অসাংবিধানিক হস্তক্ষেপ হয়েছিল, যার শাস্তি প্রধানত বিএনপিকেই ভোগ করতে হয়েছে। বিরোধী দলে থাকার সময়ও ভুল সিদ্ধান্ত ও কৌশলের জন্য বিএনপিকে এখন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।সাংগঠনিক ও নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে দলটি অস্বাভাবিকভাবে জামায়াত-নির্ভর হয়ে পড়েছে। যে কারণে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতার দায় বিএনপির কাঁধেই পড়ছে।
শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ কেন্দ্র করে বিএনপি যে স্বপ্ন দেখেছিল, তা-ও ভুল ছিল। এসব ঘটনা থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি নিজের শক্তির পরিবর্তে অন্যের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে বিএনপি যদি নিজের পায়ের ওপর দাঁড়ানোর চেষ্টা না করে তাহলে পায়ের নিচের বাকি মাটিটুকুও থাকবে না।”(তথ্যঃ বিডি নিউজ ২৪ ডট কম )
আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও একটি চরম সত্য যে, বাংলার জনগণের বিএনপির প্রতি অনেক সমর্থন ছিল এবং এখনো ভাল সমর্থন আছে। তাহলে কেন বিএনপির কেন এমন দুরবস্থা? এ নিয়ে অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিরা ভাল ভাল অনেক কথা বলেছেন বা লিখেছেন। এ প্রসঙ্গে আমি shokalerdorpon.com এর কিছু অংশ তুলে ধরছি“যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে উঠলে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের ‘নাস্তিক’ বলে দূরে ঠেলে দেয়, যদিও দলের অনেক নেতা-কর্মী তা পছন্দ করেননি। দ্বিতীয়ত, তারা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি ঘোষণার পাশাপাশি ৫ মে ঢাকায় সংগঠনটির সহিংস তাণ্ডবের প্রতি সমর্থন জানালে বিএনপির অনেক শুভানুধ্যায়ীই বিস্মিত হন। ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও তারা রাজপথে বিএনপির সহযাত্রী হননি। যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধে জামায়াতের সহিংস কর্মকাণ্ড মানুষকে আরও বেশি আন্দোলনবিমুখ করে। জামায়াতের প্রতি বিএনপির অতিশয় নির্ভরতায় দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা অস্বস্তি বোধ করলেও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাননি। এখনো পাচ্ছেন না।
জনসমর্থন বিএনপির পক্ষে থাকায় ক্ষমতাসীনেরা শুরু থেকেই বিরোধী দলকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার যে প্রয়াস চালাচ্ছিল, বিএনপি নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত সেই ফাঁদে পা দেয় জামায়াত ও হেফাজতের ভরসায়। ৪ মে মতিঝিলে খালেদা জিয়ার সমাবেশে আলটিমেটামের পর দুই দলের মধ্যে সমঝোতার পথ ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের লাগাতার অবরোধ-হরতালের কর্মসূচি এবং সরকারের দমন-পীড়নের মুখে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ার নীতিও ছিল আত্মঘাতী। সারা দেশে তো বটেই, খোদ রাজধানীতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনুপস্থিতির সুযোগে আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই জামায়াত-শিবিরের হাতে চলে যায় এবং বোমা ও আগুনে মানুষ খুন আর সরকারি সম্পদ ধ্বংসই হয়ে ওঠে তাদের প্রধান হাতিয়ার।”( তথ্যঃ সকালের দর্পণ )
মতিঝিলে অবস্থান ছিল ভুল মতিঝিলে এ প্রসঙ্গে সিলেট হেফাজতের বক্তব্য_ “মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থানের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আমি এটা সমাবেশের নেতাদের বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি। আমাদের আমির আল্লামা শফি সাহেবের সঙ্গে আমি এ বিষয়ে আলাপের কোনো সুযোগ পাইনি। কারণ তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।’ গত ৫ মে দুপুরে তিনি সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন জানিয়ে মাওলানা মুহিবুল বলেন, ‘তবে বিকেল ৫টার আগেই সমাবেশস্থল ত্যাগ করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম।” ( তথ্যঃ মানব কণ্ঠ ডট কম )
প্রকৃতপক্ষে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অভিযানকালে সব গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা পুলিশের সঙ্গেই ছিলেন। সব টিভি চ্যানেল আগে থেকেই সমাবেশস্থলের পাশে বিভিন্ন ভবনে ক্যামেরা সেট করে সারা দিন সমাবেশের সংবাদ প্রচার করেছে। সেসব ক্যামেরাও সেট করা ছিল বিভিন্ন ভবনে। প্রায় সব পত্রিকার সাংবাদিক নিয়ে পুলিশ এ অভিযান পরিচালনা করেছে। সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার বিষয়ে কোনোই বিধিনিষেধ ছিল না। তাই তাদের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের পরিসংখ্যানের কোনোই মিল নেই। এমনকি সেখানে সিএনএন, বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপিসহ বিভিন্ন বিদেশি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। (তথ্যঃ বিডি প্রতিদিন_11-05-2013)
তখন চরম সত্যকে উপেক্ষা করে বিএনপি নেত্রী বলতে থাকেন হাজার হাজার মানুষকে পাখির মতো গুলি করা হয়েছে এবং তাঁদের কিছু অন্ধ রিপোর্টার এবং সংবাদ পত্র আছে, তারা এটিকে সমর্থন করে প্রচার করতে থাকে। এখন এই বিএনপিই বলছে উল্টো কথা।
“হেফাজতের ওল্টা অবস্থানের কারণে শাপলা অভিযানের ১৪ মাস পর এসে বিএনপি নেতারা এখন বলছেন, বিএনপির আন্দোলন স্তিমিত করতেই বিশেষ সংস্থাকে দিয়ে সেসময়ে হেফাজতকে মাঠে নামিয়েছিল সরকার। তা ছাড়া ওই সময় নিহতের যে পরিসংখ্যান হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সেটিও ছিল ষড়যন্ত্রেরই অংশ। (তথ্যঃ banglanews24.com)
চরম সত্যকে উপেক্ষা করে বিএনপি নেত্রী বলতে থাকেন হাজার হাজার মানুষকে পাখির মতো গুলি করা হয়েছে অথচ এখন বলছে এগুলি মিথ্যা কথা। বাস্তব কথা হলো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিএনপি নামক দলটি এখন, ওরাই প্রমাণ করছে যে , ওরা ইসলামের হেফাজতের নাম দিয়ে নিজেদের হেফাজত করতে এসেছিলো।
মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম
লেখক_ অন্যধারা প্রকাশন
Sahidul_77@yahoo.com